
পুলিশ সপ্তাহ উদ্বোধনকালে প্রধান উপদেষ্টা
পুলিশকে উজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার
- আপলোড সময় : ৩০-০৪-২০২৫ ০৪:০৫:১৩ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ৩০-০৪-২০২৫ ০৪:০৫:১৩ অপরাহ্ন


* আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পুলিশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ
* স্বৈরাচারী শাসনামলে পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছিল
* নির্বিঘ্নে ভোট দেয়ার পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব পুলিশের ও আমাদের
* অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ জনরোষের শিকার হয়েছে
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নির্বাচনের আগের সময়টা অনেকটা কঠিন। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পুলিশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই পুলিশকে সজাগ থাকতে হবে পরাজিত শক্তি যেন কোনভাবেই দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে। তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছর পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছিল। অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ বাহিনী জনরোষের শিকার হয়, যার কারণে অনেক সৎ অফিসারকেও মাশুল দিতে হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার পতনের পর পুলিশ বাহিনী ভেঙে পড়েছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশকে উজ্জীবিত করতে। পুলিশের কাজের সহায়ক পরিস্থিতি যাতে তৈরি হয়, সেজন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেয়ার মাধ্যমে পুলিশ সপ্তাহের উদ্বোধনকালে তিনি একথা বলেন। এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী, আইজিপিসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে উদ্বোধনী দিনেই এবার পদকের জন্য ঘোষিত ৬২ জন কৃতি পুলিশ সদস্যকে পদক পরিয়ে দেন প্রধান উপদেষ্টা। এবারের পুলিশ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য ‘আমার পুলিশ, আমার দেশ, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ’। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজি, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলার পুলিশ সুপারসহ সব পদবীর পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, সর্বস্তরের মানুষের অধিকার, মর্যাদা, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে কোনো বৈষম্য থাকবে না যুগ যুগ ধরে এটি ছিল মানুষের আকাক্সক্ষা। এই আকাক্সক্ষা পূরণে জোর ভূমিকা রাখতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পুলিশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছিল। অবৈধ আদেশ পালন করতে গিয়ে জনরোষের শিকার হয়েছে এই বাহিনী। যার মাশুল দিতে হয়েছে অনেক সৎ অফিসারকেও। নির্বাচনের বছরটি খুব কঠিন, পরাজিত শক্তি যাতে দেশ অস্থিতিশীল করতে না পারে সেজন্য পুলিশকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পুলিশের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ এবং ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে সে পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পতিত, স্বৈরাচারী শাসনের অবৈধ অন্যায় আদেশ পালন করতে গিয়ে পুলিশ বাহিনী জনরোষের মুখে পড়েছে। তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশকে দলীয় বাহিনীতে পরিণত করেছিল। এর কারণে অনেক সৎ পুলিশ সদস্যকে মাশুল দিতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরাজিত শক্তি যেন দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে বিষয়ে পুলিশকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের মানুষ নারীর প্রতি সহিংসহতা প্রতিরোধে পুলিশ বাহিনীকে শক্তিশালী ভূমিকায় দেখতে চায়। যেকোনো হয়রানির ঘটনায় সকল শ্রেণি পেশার নারীরা যেনো পুলিশের হটলাইনে ফোন করে সেবা পায়, সেটা নিশ্চিত করবেন।
কোনো ব্যক্তি যদি অন্যায় বা অনিয়মের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়, সেই ব্যক্তির মাধ্যমে ন্যায় প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় বলে পুলিশ সদস্যদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, নিশ্চিত করুন যাতে কারো দ্বারা ব্যবহৃত না হন। সত্য ন্যায় প্রতিষ্ঠার ব্রত হিসেবে নির্বাচনে নিজেদেরকে নিয়োজিত করবেন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে তাদের নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ দায়িত্ব আপনাদের (পুলিশের) ও আমাদের।
জাতির উদ্দেশে দেয়া একাধিক ভাষণের উদাহরণ দিয়ে ড. ইউনূস বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে দেশের ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচন যেন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য পুলিশ সদস্যদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, নির্বাচনে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর প্রতি সমান আচরণ, ভোটাররা যাতে নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে তাদের নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ দায়িত্ব আপনাদের ও আমাদের।
পুলিশ সদস্যদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, পুলিশ বাহিনীর সদস্য হিসেবে বা তার চাইতে বড় বিষয় হচ্ছে এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে ভবিষ্যতে কখনো যেন পুলিশ বাহিনীকে দলীয় বাহিনী হিসেবে বা অন্যায় কাজে ব্যবহার করা না যায়, যার জন্য একটা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। নির্বাচনের আগের সময়টা অত্যন্ত কঠিন সময় উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আপনাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে, পরাজিত শক্তি যেন কোনোভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে। আবারো স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা একটা যুদ্ধাবস্থায় আছি। অশুভ চক্র আমাদের স্বপ্নকে আমাদের ঐক্যকে ভেঙে দিতে সব শক্তি নিয়ে চেষ্টা করছে, চেষ্টা আরও কঠোরতর করতে পারে। এটি প্রতিহত করার জন্য আপনাদেরকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে জাতিকে রক্ষা করার জন্য।
পুলিশ সপ্তাহে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত আগস্টে অন্তর্বর্তী সরকার যখন দায়িত্ব গ্রহণ করে সে সময় এ দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। পুলিশের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। সরকার পরিস্থিতি উন্নতির জন্য যা কিছু প্রয়োজন সব রকমের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সড়ক মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা ও জনদুর্ভোগ নিরসন, বিশেষ অভিযান পরিচালনা অংশীজনদের সঙ্গে পুলিশের আন্ত যোগাযোগ জোরদার করা, পুলিশ সদস্যদের মনোবলবৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় প্রণোদনামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আপনাদের অত্যন্ত পরিশ্রমে ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা বিশ্ব ইজতেমা ও ঈদুল ফিতর বাংলা নববর্ষসহ বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশে যতগুলো অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে তাৎক্ষণিকভাবে সবগুলো ঘটনায় ব্যবস্থা গ্রহণের সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হয়েছে। এজন্য পুলিশসহ সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা এ সময় নিজে হাততালি দিয়ে বলেন, এই হাততালি আপনাদের প্রাপ্য। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, খুব ভালো লাগছে সবার সঙ্গে দেখা করতে পেরে, এই পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে দেখা হলো। আপনাদের কাছ থেকে কিছু প্রাথমিক বক্তব্য শুনলাম। শুনে বুঝতে পারলাম যে অনেকগুলো কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। যেটা আমাদের পক্ষ থেকে করার কথা ছিল, তা উচিত। এর আগে আমরা একবার নিজেদের মধ্যে বসেছিলাম। আমার কাছে খুবই খারাপ লাগছিল। কী রকম পরিস্থিতিতে আপনাদের কাজ করতে হয়, তা আমার জানা ছিল না। আপনাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন কত কঠিন, সেটার মাত্রা কত গভীর। ড. ইউনূস বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, আশা করি তা বাস্তবায়িত হয়েছে। কতদূর হয়েছে, সেটা আবার খোঁজ নেবো। আমরা আজকে আবার বসবো যাতে করে আপনাদের কাজের সহায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যায়। আপনারা যেন কাজে উৎসাহ পান এবং পরিস্থিতি সহায়ক হয়। ভালো লাগছে যারা প্রযুক্তির মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন। আশা করছি ভবিষ্যতে একসঙ্গে বসে আলাপ করার সুযোগ হবে।
পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের সব সদস্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা লিখিত বক্তব্যে বলেন, এখানে উপস্থিত হতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে ২৫ মার্চ কাল রাতে রাজারবাগ এই পুলিশ লাইনে বাঙালি পুলিশ সদস্যরা প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই ইতিহাস ভোলার নয়। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গৌরবময় ইতিহাসে এটি মহাগৌরবের। মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ সদস্যদের তিনি স্মরণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুলিশের সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তৃণমূল পর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের কল্যাণে দ্রুত কয়েকটি বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার কারণে আপনাদের কথা শোনার পর আমরা আবার দ্রুত একবার বসব যাতে করে যে সমস্ত সমস্যা আছে, সেগুলোর সমাধানের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়। তিনি বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু। পুলিশ বাহিনীকে সেই ইমেজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটা কঠিন। কঠিন হলেও এটাই ন্যায্য এবং এটাই আমাদের করতে হবে। তিনি বলেন, প্রথমবারের মতো এবার পুলিশ সপ্তাহে ধর্ম নেতা, সাংবাদিক ও বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে পৃথক একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে আমি জানতে পেরেছি। এই বৈঠকে পুলিশের জনসাধারণের ওপর মানুষের প্রত্যাশা আলোচনা হবে। আমার প্রত্যাশা হলো, এটিই যেন চলমান থাকে। প্রতিবছর পুলিশ সপ্তাহে যেন এ ধরনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। আর পুলিশ সপ্তাহের জন্য অপেক্ষা করতে যেন না হয়। সুযোগ পেলেই এ ধরনের বৈঠকের আয়োজন করতে হবে, যাতে করে পরস্পর ভুল বোঝাবুঝি পরিষ্কার হয়ে যায়। পুলিশের সঙ্গে জনগণের দূরত্ব কমিয়ে আনতে এ ধরনের বৈঠক অত্যন্ত জরুরি।
নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে দেশের মানুষ পুলিশ বাহিনীকে খুবই শক্তিশালী ভূমিকায় দেখতে চায় বলে উল্লেখ করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তিনি নারী-শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ সংবেদনশীল হয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনে পুলিশ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে দেশের মানুষ পুলিশ বাহিনীকে খুব শক্তিশালী ভূমিকায় দেখতে চায়। আমি আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাই নারী ও শিশুর নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ সংবেদনশীল হয়ে কাজ করবেন। সব শ্রেণি-পেশার নারীরা যেকোনো ধরনের ঘটনায় পুলিশের হটলাইনে ফোন করে যেন সর্বোচ্চ সাহায্য পান সেটি নিশ্চিত করবেন। নারী এবং শিশু নিরাপত্তা পেলে আমরা বুঝতে পারবো দেশ নিরাপত্তার দিকে অনেক দূর এগিয়ে গেছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা জানি পুলিশ বাহিনীর সামনে নানা সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। অপ্রতুল জনবল, লজিস্টিকস, পর্যাপ্ত বাজেট ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বিগত ১৬ বছরের পুলিশ ও জনগণের মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে সেই দূরত্ব কমিয়ে আনা। পুলিশ বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনা। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি বলবো এটা কঠিন না, একবার সে আন্তরিক পরিবেশ সৃষ্টি হলে এ বন্ধন অটুট থাকবে। আমাদের সমাজ যে একটা সুশৃঙ্খল সমাজ সেটা প্রমাণিত হবে। আমাদের সবাই মিলে একটা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা হবে, যেন সাধারণ মানুষ ও পুলিশ মধ্যেকার দূরত্ব আমরা ঘুচিয়ে ফেলতে পারি। মানুষ যেন পুলিশকে দেখলেই বন্ধু হিসেবে বড় করতে এগিয়ে আসে। তার প্রতি মানুষের বিরূপ মনোভাব যেন না থাকে। মাঠ পর্যায় থেকে শুরু করে সব স্তরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জনগণের বিশ্বাস অর্জনের জন্য কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, এই কাজটা আপনাদেরকেই করতে হবে এবং সরকারের দিক থেকে যা যা প্রয়োজন তা বাস্তবায়ন করা আমাদের দায়িত্ব আমরা সে দায়িত্ব গ্রহণ করছি।
আমরা একটা ন্যায্যতার ভিত্তিতে গঠিত একটি বৈষম্যমুক্ত গণতান্ত্রিক নির্মাণের স্বপ্ন দেখছি উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, আমরা দ্বিতীয় বাংলাদেশ গঠন করার স্বপ্ন দেখছি। জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে। এই সুযোগ যেন আমরা না হারাই। এই সুযোগ হারালে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে চিরজীবনের জন্য দায়ী থাকবো। বিশ্বের বুকে একটি শান্তিপূর্ণ-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে এবং মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে সবসময়। এই স্বপ্ন পূরণে আপনাদের ভূমিকা অনেক। পুলিশের কাজকর্ম ও পুলিশের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পর্ক এটা দেখেই সারা দুনিয়া বিচার করে যে আমরা সভ্যতার কোন পর্যায়ে আছি। আমরা সভ্যতার সর্বোচ্চ পর্যায়ে যেতে চাই, এটাই আমাদের স্বপ্ন। এই স্বপ্ন পূরণে বা বাস্তবায়নে আপনারাই একটা গুরুত্বপূর্ণ শক্তি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী যেন গোটা বিশ্বে প্রশংসিত হয়, দেশের সব মানুষের কাছে সংস্কৃত হয় প্রশংসিত হয় সে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ